ঝড়
গগন ছেয়ে আসিল ঝড় আসিল, ঝড়, ঝড়,
ধম্কে ওঠে, চম্কে ওঠে, গুরু গর্জনে কড়ার কড়্।
বিজলি নাচে ধমনী নাচে, উন্মাদ হল ধরণী,
শুক্নো গাঙ্গে তীর ভাঙ্গে কাঁপে পাপের তরণী।
মাতিয়া ছুটিয়া চলি নৃত্য চপল দুর্যোগের দিন,
ধ্বংসের যামী ভোর দেখি, বাজাই রুদ্র সুরে বীণ।
কে এল আজি, ডেকে যায় ঐ দূর্ কেঁদে কেঁদে,
কে এল আজি, বিপ্লবী সাজে, যায় সেধে সেধে।
বিষম বাধা রহি রহি কাঁদা আর নয়, আর নয়,
অন্যায় রোধে চিৎকারী ওঠে, ঐ দেখ্ দিক বলয়।
শিলা ঝরে মাথার ‘পরে চূর্ণি দেয় রক্ত চাপ,
ত্যাজিয়া আসন কাঙ্গাল, এবার ছাড়ো ছাড়ো হাফ।
বর্ষণে বাতাসে করি একাকার নাচো, নাচো, নাচো,
কীসের এত ভয়, হবে হবেই জয়—সফল বাঁচা বাঁচো।
ভোট জালিয়াত, দুমুর্জদল একসাথে বাস করে ঐ,
ফাঁসির দড়ি গলায় দিয়ে বিবেক হাসে, হৈ, হৈ, রৈ, রৈ।
পশুর দল ঠায় দাঁড়িয়ে করে মাছের মায়ের পুত্রশোক,
আর দেখিব কত বল্ বল্ ওরে বল্ যত গরীব লোক।
কিসের আশায় বেঁচে আছিস্ অন্যায় চেপে তোর মনে,
দিবে নাকি এক বেলা ভাত ক্ষুধার্ত ঐ, লক্ষ জনে।
কথার ফুল ঝুরি—গন্ধ নাহি তাতে, আহা গন্ধ নাহি তাতে,
নেতৃত্ব— দেখ্ ছলে, কলে চুরি করে অঁাধারে গভীর রাতে।
রক্ত নেশায় উন্মাদ আমি, বাঁচার নেশায় আজ উন্মাদ,
সভ্যতার ঐ মাথা খেয়ে, খাইব পরে কোমল চাঁদ।
কিসের তরে ভয় করিব, সিংহ রূপে বাচঁবো ক্ষণকাল,
মরতে যদি হবেই আমার, করব মরণ কেন অন্তরাল।
এগোয় তোরা কূট কুশলী—সাহস যদি থাকে বুকে,
আর পারি না, আর পারি না, চুষ্তে আঙ্গুল লুকে লুকে।
চিনি আমি তোর্ চেহারা, রে পিশাচ, রে দড়িবাজ ধন চোর,
একবার যদি পাই ছাড়া, আর রক্ষা নাহি থাকবে তোর।
ঝড়ের বেগে ছুট্ব আমি, মুষড়ে দেব কাল হাত,
কাল নাগের ছোবল দিয়ে, মারব যত জাত অভিজাত।
ক্ষুধার জ্বালা সইতে নারি, রইতে নারি ঘরে আর,
হাভাত ঝড় এসে কেন, ভাঙ্গলে শুধুই ঘরটি আমার।
০৪/০২/১৯৮৮ খ্রিঃ টিকরপুর, ঢাকা।