তৃতীয় প্রহরে জেগে আছি

 

বিরস পৃথিবীর সরস অশান্তি উড্ডীয়মান—

তৃতীয় প্রহরে জেগে আছি—

বেওকুপের নাভী ছিঁড়ে খাচ্ছে

আগন্তুক এক হাড়ি রৌদ্র

ক্লান্তির মানুষ বুঝে নিক্—

ঈশান কোণের সংকেত;

বিমর্ষ বাতাস এই মুখে

দেখাচ্ছে, হুতুম ভয়, তবু

তৃতীয় প্রহরে জেগে আছি

আদি রস পান করতে কে এসেছিল,

এই বুকে

তখনও ছিল

ফুল্ল মাঝির সবল হাত

একটি ধ্যানমগ্ন, বাঙ্গালী বীজ।

এখন বৈশাখের বেশ্যা, উদোম

করেছে তার যোনী

যেখানে গনোরিয়া ক্লিষ্ট সবুজ শ্যামলিমা—

তৃতীয় প্রহরে জেগে আছি

রাখাল এখন হিসেব কষে—

স্নায়ুহীন ঠেঁাটে

জাবর কাটে গরু—

শান্তির ঘাম নেই নাকাগ্রে

আমি হৃদয়ে দেখেছি,

চাঞ্চল্যকর খুনের ফেরারী আসামী

ধর্ষিতা অতঃপর নিহত মায়ার

নিঃসাড় দেহ—

পুকুরের ধামের নিচে

নাচে ইতর ছোট লোক ব্যাঙ্গাচী,

বৈশাখের ধান, দুষ্ট কাকেরা

খায় না

বিদেশী সাহায্যপুষ্ট শহুরে দেহ পসারিণী

ইংলিশ রোড়স্থ

তিলোত্তম এই, মাগী

মুখ টিপিয়ে হাসে

নিন্তব্ধ জরাজীর্ণ রাতে

মার্কিন লিঙ্গ ক্রমশ ঢুকিয়াছে

জরায়ু জটরে—

অন্তসত্তা মাঠ

এখন এপাশ ওপাশ করে।

 

হুঁশিয়ার—

দামাল ছেলে ঐ আসছে ফাগুনে

ঐ বৈশাখের ঝড়ে

বর্ষা ভাদরে

ঐ আসছে, নেপথ্যে শোনা যায়

বির্দীর্ন উচ্চারণ—

হুঁশিয়ার— এ মা—টি আমার।

অপরাজেয় বাংলা চেপে আছে

এই বুকে— এই হাটে, মাঠে—ঘাটে

বিস্ফোরিত ডাগর চোখে

লক্ লকে আগুনের জিহ্বা

আমি দেখছি, নাটকের শেষ নেই—

ঝাঁক ঝাঁক সারস চঞ্চু তুলে নেবে

মেঘঘন আকাশের অপর পিঠে

মনের দেশে ক্ষোভের তোল পাড়—

বিষাক্ত সাপ হাঁ করে—

তৃতীয় প্রহরে জেগে আছি।

 

তারিখ— ১৪/০৪/৯০—নবাবগঞ্জ, ঢাকা।